স্মৃতিসৌধের সামনে কিছুক্ষণ ( পর্ব ২)
স্মৃতিসৌধের সামনে কিছুক্ষণ ( পর্ব ২) -ফারজানা মিতু
ডিসেম্বর মাস এলেই তুমি কেনো এতো আনমনা হয়ে যাও বাবা? স্মৃতিসৌধের সামনে এসে মনে হয় কিছু খুজে যাও। কি খোঁজো বাবা?
আমি আমার পরিচয় খুজি , আমার অস্তিত্ব খুজি রে বাবা,
স্মৃতিসৌধের কাছে তোমার অস্তিত্ব?
হ্যা বাবা, এখানেই তো তোর আমার পরিচয়, যা নয় মাস সংগ্রাম করে পাওয়া।
বাবা তুমিও তো যুদ্ধে গিয়েছিলে, এই দেশের বুকে লাল সবুজ পতাকা দেখতে চেয়েছিলে।
চেয়েছিলাম তো অনেককিছুই, সবচেয়ে বেশি চেয়েছিলাম পাকসেনাদের সামনে নিজের বুক পেতে দিতে।
দিতে পারো নাই বলে কি তোমার কষ্ট হয় বাবা?
হয় বাবা, বার বার মনে হয় আরও কিছু জীবন বিলিয়ে দেয়া উচিৎ ছিলো, আরও কিছু মায়ের বুক খালি হওয়া উচিৎ ছিলো তাহলে আজকে দেশের এই অবস্থা হতো না, দেখতাম আরও কতো রক্ত দিলে এই দেশ সত্যিকার স্বাধীনতার স্বাদ পাবে। দেখতাম আরও কতো জীবন পেলে এই দেশ লাল সবুজ পতাকার মান রাখবে।
বাবা আমাদের দেশে আবারও কি তবে যুদ্ধ হবে?
হবে বাবা, আবারও যুদ্ধ হবে। এই দেশের সোনার ছেলেরা বীর বেশে আবারও ঝাঁপিয়ে পড়বে। ওরা দেশকে আর পরাধিন থাকতে দেবেনা, আর কারো সামনে মাথা নুইয়ে থাকতে দেবেনা। দেশের অস্তিত্ব তারা বার বার বাঁচিয়ে দেবে।
সেদিন তাহলে আমিও যুদ্ধে যাবো বাবা, আমিও শহীদ মিনার আর স্মৃতিসৌধের সামনে এসে তোমার মতো বুক ফুলিয়ে দাঁড়াবো। আর এভাবেই নিজের অস্তিত্ব খুজে যাবো।
আমিও সেই দিনটির অপেক্ষায় থাকবো বেটা। যেদিন আমি বীর দর্পণে বলতে পারবো, এই দেশ আমার সন্তানের রক্তে কেনা, এই দেশ আমার উত্তরাধিকারের স্বপ্নে কেনা...।।